Saturday 13 July 2013

প্রধানমন্ত্রী বললেন বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেখাবো কিছু করেছি কিনা

সরকারের অর্জন না দেখে সমালোচনা করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচ সিটি করপোরেশনে দুর্নীতিবাজরা নির্বাচিত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, দুর্নীতিবাজরাই যদি জিতে আসে তাহলে কার জন্য এত উন্নতি করেছি? বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও এ নিয়ে সমালোচনায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগে যে বিদ্যুৎ ছিল তা রেখে বাড়তি কেন্দ্র বন্ধ করে দিলে বোঝা যাবে কিছু করেছি কিনা। রোজার পরে এটি প্র্যাকটিস করতে হবে। এটি ঘোষণা দিয়েই করা হবে। গতকাল গণভবনে আয়োজিত বিআরটিসি বাসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  তিনি বলেন, ১৬শ’ মেগাওয়াট থেকে ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিলাম। সাত বছর পরে  (২০০৯ সালে) এসে পেলাম ৩২০০ মেগাওয়াট। এবারও ক্ষমতায় এসে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় বাড়ানোর উদ্যোগ নিলাম। আট  থেকে নয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি আমরা অর্জন করেছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে করেছি। গতকালকেও (শুক্রবার) ৬৬৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। সমস্যার সমাধান করলেও সমস্যা। সেটা নিয়েও কথা। কুইক  রেন্টাল কেন করা হলো? অমুক কেন করা হলো? তিনি বলেন, আমি যদি এখন সিদ্ধান্ত নিই, যারা সমালোচনা করে তাদের এবং মানুষকে বোঝানোর জন্য ৩২০০ মেগাওয়াট রেখে বাকি ৫৪-৫৫টা যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি- সেটা বন্ধ করে রাখি দু’চার দিন। তখন অবস্থাটা কি হবে? রোজার পরে এরকম একটা প্র্যাকটিস করতে হবে। মানুষকে বোঝানোর জন্য- কি ছিল, আর এখন কি আছে। না হলে এই সমালোচনা চলতেই থাকবে। ঈদের পর এই ধরনের ‘প্র্যাকটিস’ ঘোষণা দিয়েই করা হবে। 
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুর্নীতিবাজরা জয়ী হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সৎ, যারা উন্নতি করেছে- তারা  ভোট পাননি। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি আর খুনের সঙ্গে জড়িত, তারা জিতে এলো।  কেন এটি হলো এর জবাব তো আমার কাছে নেই। এটি আপনারা খুঁজে দেখুন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটা ক্যান্ডিডেটের বিরুদ্ধে তো কেউ কোন দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি। যারা দুর্নীতি করেনি, যারা ক্লিন ইমেজের, তারা জিততে পারেনি।
দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি, সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়া উচিত। আলটিমেটলি এটা দলীয়ভাবেই হয়। দলীয়ভাবে হলে একটা ডিসিপ্লিন থাকবে। ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে দলীয়ভাবেই হয়। 
সিটি নির্বাচনের ফল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুনলাম জাতীয় ইস্যুর জন্য হেরে গেছি। জাতীয় ইস্যু কি? জাতীয় ইস্যুর জন্যই যদি হারবো, তাহলে আমার প্রশ্ন জাতীয় ইস্যু হয়ে গেল দুর্নীতি? আমাদের সরকার নাকি দুর্নীতি করেছে। দুর্নীতি করে তো এত উন্নয়ন সম্ভব না।
বিদ্যুৎ উৎপাদন, স্বাস্থ্যসেবার মান, শিক্ষার মান কিছুই তো কমেনি,  বেড়েছে। তাহলে, দুর্নীতি কোথায় হলো? হল-মার্ক আর ডেসটিনি আমরা ধরলাম। আর, চোর ধরে আমরা অপরাধী হয়ে গেলাম?
তিনি বলেন, গাজীপুর ইলেকশনে আমরা যাকে সাপোর্ট দিয়েছি সে তিনবারের পৌরসভা মেয়র। তার বিরুদ্ধে একটা দুর্নীতির কথা  কেউ বলতে পারেনি। ক্লিন ইমেজের লোক। তাকে হারতে হলো! জিতলো কে? ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যে হজের টাকা লুটে খেলো। ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা আতঙ্কগ্রস্ত। টাকা নিয়ে বসে থাকতে হবে, তাকে চাঁদার টাকা দিতে হবে। খুলনার মেয়র নকশাল করতো, আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি। খুনের মামলার আসামি ছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে দল করতে গিয়ে খুনের মামলার আসামিকে জেলখানা থেকে বের করে দল করা শুরু করেন। খুলনায় মানিক সাহা, সাংবাদিক বালু ও মঞ্জুরুল ইমাম থেকে যত মার্ডার হয়েছে- এই আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি জড়িত। সে  ভোট পায়। জিতে আসে!
http://www.mzamin.com/details.php?nid=NjI1ODk=&ty=MA==&s=MTg=&c=MQ==

No comments:

Post a Comment